নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করণীয়
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ গর্ভকালীন সময় প্রতিটি মায়ের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সময় । নরমাল ডেলিভারি করাতে চান কারণ এটা খুব তাড়াতাড়ি আরোগ্য হয় । নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করণীয় কি কি ও প্রাকৃতিকভাবে কিভাবে প্রসব করানো হয় এই সব কিছুই জানাবো আজ এই আর্টিকেলে।
সূচিপত্র আপনি কি খাবার খেতে হবে , ব্যায়াম করতে হবে এমন আরো অনেক কিছু জানাবো আজ এই আর্টিকেলে।
নরমাল ডেলিভারি
নরমাল ডেলিভারি এমন একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ায় যোনিপথের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করানো হয়।নরমাল ডেলিভারি সাধারণত সন্তান প্রসবের জন্য নিরাপদ একটি উপায় । ডেলিভারি প্রক্রিয়া সাধারণত দুই প্রকার, নরমাল ডেলিভারি ও সিজার । নরমাল ডেলিভারি হলো যোনিপথের মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে যে বাচ্চা জন্ম নেয়।
আরও পড়ুন ঃ সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ
নরমাল ডেলিভারি প্রতিটা মা এবং বাচ্চার জন্য ভালো । নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে বাচ্চা হওয়া সিজারিয়ানের তুলনায় ঝুঁকি কম। নরমাল ডেলিভারি করলে সাধারণত অস্ত্র পাচার করতে হয় না এর ফলে মা ও শিশু দুজনের জন্যই নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করনীয়
আপনি যদি নরমাল ডেলিভারি করতে চান তাহলে আপনাকে অনেক কিছু মেনে চলতে হবে জানতে হবে। নরমাল ডেলিভারি এমন একটি প্রক্রিয়া আছে প্রক্রিয়ায় যোনিপথের মাঝখানে বাচ্চা প্রসব করানো হয়। অনেক মায়েরা আছে নরমাল ডেলিভারি করতে ভয় পায়।
আরো পরুন ঃপ্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
এজন্য আপনাকে জানতে হবে নরমাল ডেলিভারি আসলেই কেমন ভয় পাওয়ার কোন কারণ আছে কিনা । আবার অনেক মা আছে যারা নরমাল ডেলিভারি করাতে চান কারন এটি তাড়াতাড়ি আরোগ্য লাভ করতে সাহায্য করে। আপনি যদি নরমাল ডেলিভারি করাতে চান তাহলে আপনাকে নরমাল ডেলিভারি করতে কি করা প্রয়োজন সে সম্পর্কে জানতে হবে।
নরমাল ডেলিভারি করাতে গেলে আপনাকে খুব মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।এখন আপনাদের জানাবো নরমাল ডেলিভারি হওয়ার করনীয় কি কি ? চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি নরমাল ডেলিভারির জন্য প্রস্তুতি নিবেনঃ
- মানসিক প্রস্তুতি
- পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
আরো পড়ুন ঃ গর্ভবতী হওয়ার তৃতীয় সপ্তাহের লক্ষন
- সঠিক মাত্রার ওজন
- চেকআপ করা
- ঘুম এবং বিশ্রাম
মানসিক প্রস্তুতি
অবশ্যই আপনাকে আগে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে যে আপনি নরমাল ডেলিভারি করাবেন । আপনার যদি মানসিকভাবে প্রস্তুতি না নেওয়া থাকে তাহলে আপনি ভয় পেয়ে যেতে পারেন । প্রতিটা কাজের জন্যই আগে প্রতিটা মানুষকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি রাখা উচিত ।
আপনি যদি মানুষের ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে দেখেন তাহলে আপনার কাছেও কঠিন কাজও সহজ হয়ে যাবে । নরমাল ডেলিভারি করাতে গেলে আপনার মনের ভেতর জোর থাকতে হবে। চিন্তা থেকে দূরে থাকতে হবে পরিবারের সাহায্য নিতে হবে । অতিরিক্ত চিন্তা বা আতঙ্ক থেকে এড়িয়ে নিজেকে শক্ত রাখতে হবে ।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য আপনার অবশ্যই খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। খাবারের সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। এ সময় আপনার সৃষ্টিকর খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি । পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে আপনার শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে এবং আপনার বাচ্চা সুস্থ এবং ভালো থাকবে।
এর ফলে আপনার নরমাল ডেলিভারি করাতে সহজ হবে এবং নরমাল ডেলিভারি করানোর ফলে মা ও বাচ্চা দুজনেই সুস্থ থাকতে পারবে। করাতে গেলে আপনার শরীরের শক্তি প্রয়োজন আছে আর এই জন্য পুষ্টিকর খাবার খেয়ে সে সত্যিই সঞ্চয় করতে হবে।,
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে, মাছ ,দুধ ,ডিম এই খাবারগুলো খাবেন। শাকসবজি ফলমূল এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রতিটি মানুষের জন্যই জরুরি, কিন্তু নরমাল ডেলিভারি করাতে গেলে খাবারের ভূমিকা অপরিসীম। তাই আপনি এই সময় বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খাবেন।
নিয়মিত ব্যায়াম করা
নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে ব্যায়ামের কোন তুলনা হয় না । আপনি যদি মনে করেন নরমাল ডেলিভারি করাবেন তাহলে আপনাকে অনেক ব্যায়াম করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে হাঁটতে হবে আপনি যদি কোথাও যান কোন কাজে যান সেখানে আপনি গাড়িতে না দিয়ে জোরে জোরে হেটে যেতে পারেন।
এভাবে আপনার ব্যায়াম হয়ে যাবে। আপনি প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করবেন । আপনি যদি লিফটে উপরে ওঠেন তাহলে এখন লিস্ট এর পরিবর্তে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠবেন এভাবেও আপনারা ব্যায়াম হয়ে যাবে । গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
এ সময় আপনি কঠিন এক্সারসাইজ করবেন না না করাই ভালো যেমন ক্যারাটে। কোন এক্সারসাইজ আপনার জন্য ভালো হবে সেটা ডাক্তারের পরামর্শ নিলে আরো ভালো হয়। সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা , হাটাহাটি করা এ ধরনের গানগুলো আপনি করতে পারেন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার শরীরের পিসি গুলো শক্তিশালী করে তোলে , কর্ম ক্ষমতা বাড়ে , মন মেজাজ ভালো থাকে ।
নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে আপনার সিজারের মত কাজ করতে হবে না । সময়ের আগে বাচ্চা প্রসব করার মতো সমস্যা হবে না । নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে বাচ্চার ওজন ঠিকঠাক থাকে ওজন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে যার ফলে বাচ্চা নরমাল ডেলিভারি হতে সহজ হয়।
সঠিক মাত্রার ওজন
এ সময় আপনাকে আপনার ওজনের বিজেপি খেয়াল রাখতে হবে আপনার ওজন যেন সঠিক মাত্রার মধ্যে থাকে । ওজন বেশি হওয়া ভালো না আবার একদম কমে যাওয়া ভালো না । আপনার ওজন বেশি হলে বাচ্চার ওজন বেড়ে যাবে এরকম তখন আপনার নরমাল ডেলিভারি হতে কষ্ট হবে এবং সমস্যা হতে পারে।
ওজন যদি সঠিক মাত্রার মধ্যে থাকে তখন আপনার নরমাল ডেলিভারি হতে সহজ হবে এবং খুব সহজেই হয়ে যাবে। বাচ্চার যোনিপথের মাধ্যমে প্রসব করাতে গেলে সঠিক মাত্রার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এদিকে নজর রাখতে হবে ।
চেকআপ করা
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া , ব্যায়াম করা এসব কিছুর পাশাপাশি আপনাকে নিয়মিত চেপে যেতে হবে । কারণ চেকআপের মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার বাচ্চার পজিশন কি কি অবস্থায় আছে । ব্রেকআপ করার মাধ্যমে আপনি আপনার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য মা এবং শিশু ভালো থাকবে আপনাকে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। চেকআপ করতে না গেলে আপনি বুঝতে পারবেন না বাচ্চা কোন পজিশনে আছে সুস্থ আছে কিনা। প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের নিয়মিত চেকআপ করানো অবশ্যক বলে আমি মনে করি।
ঘুম এবং বিশ্রাম
অতিরিক্ত কাজ মানুষকে দুর্বল করে দিতে পারে যা প্রসবকে কঠিন করে তোলে । নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য এ সময় আপনার পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমাতে হবে কোন ধরনের মানসিক চাপ নেওয়া যাবে না ।
দুপুরবেলা বিশ্রাম নিতে হবে আপনার শরীরের ক্লান্তি সব দূর করে দিতে হবে । আপনি যদি ঠিকমতো বিশ্রাম না নেন না ঘুমান তাহলে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আর নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে আপনার শরীরের শক্তি প্রয়োজন এজন্য এ সময় আপনাকে শারীরিক এবং মানসিক দুই ভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
কোন ধরনের মানুষের চাপ এ সময় আপনি আপনার মাঝে নিয়ে আসবেন না । এই সময় আপনি কোন ভারী কাজ করবেন না আপনার সাধ্যের বাইরে কোন কাজ করবেন না যতদূর সম্ভব বিশ্রাম নেবেন। কোন ধরনের স্ট্রেস আপনার মধ্যে নিয়ে আসবেন না।
উপসংহার
নরমাল ডেলিভারি প্রকৃতির একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া । এর জন্য সঠিক প্রস্তুতি , স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন ও মানসিক জোর থাকা প্রয়োজন । আপনার মধ্যে যদি এই তিনটি গুনে থাকে তাহলে আপনিও নরমাল ডেলিভারি করাতে পারবেন । এই গুণগুলো থাকলে অধিকাংশ ময়দানে নরমাল ডেলিভারি করাতে পারবে কোন ভয় পাবে না।
আপনার যদি কোন সমস্যা দেখা যায় আর সিজার করতে হয় তাহলে কোন ভয় পাবেন না। আপনার সাহস ও সচেতনতাই আপনাকে একটি সুন্দর অভিজ্ঞতার দিকে নিয়ে যাবে । এজন্য আপনার মনের জোর থাকতে হবে অনেক । আজ এই আর্টিকেলে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার যে করণীয় গুলো আছে সেসব সম্পর্কে জানালাম। আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন এবং আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url