কিডনি ড্যামেজ এর লক্ষণ-জেনে নিন ৭টি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ
ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম আপনি নিশ্চয়ই জানেন কিডনি আমাদের শরীরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ । বিভিন্ন কারণে টিভি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষেরই কিডনি ড্যামেজ হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে জানা উচিত । কিডনি ড্যামেজ হওয়ার হওয়ার লক্ষণগুলো চিনে নিন সময় মত। প্রসাদের সমস্যা, শরীর ফুলে যাওয়া , ক্লান্তি এবং বিভিন্ন উপসর্গ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো এই আর্টিকেলে ।
সূচিপত্রআজ এই আর্টিকেলে জানতে পারবেন আপনি আপনার কিডনি সুস্থ আছে কিনা ডেমেজ হওয়ার লক্ষণ গুলো এসব কিছু সম্পর্কে জানতে পারবে।
কিডনি ড্যামেজ এর লক্ষণ
প্রতিটা মানুষই জানে মানুষের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল কিডনি । একটি মানুষকে সুস্থ সবল ভাবে বাঁচতে হলে কি দিয়ে ভালো থাকা জরুরি । তাই প্রতিটা মানুষেরই জানা উচিত আমাদের কিডনি ভালো আছে কিনা, সুস্থ আছে কিনা।
আরো পড়ুন ঃ দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার ৭ টি প্রাকৃতিক উপায়
আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে গেলে আমাদের কিডনিও ভালো থাকা জরুরী । আপনি যদি না জানেন আপনার কিডনি সুস্থ আছে কিনা তাহলে আপনি এই ছেলে জানতে পারবেন আপনার কি দিয়ে কি অবস্থা।
এখন কিছু কি দিয়ে ড্যামেজ এর লক্ষণ দিয়ে দিব দেখে নেবেন এই লক্ষণগুলো আপনার মাঝেও আছে কিনা । যদি এই লক্ষণ গুলো আপনার মাঝে থেকে থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ গুলো কি কিঃ
- বমি বমি ভাব ও খাবারে অরুচি
- শরীর ফুলে যাওয়া
- ক্লান্ত অনুভব করা
- প্রসাবে সমস্যা
- ঘুমের সমস্যা
- শ্বাসকষ্ট
- ত্বকে চুলকানি ও শুষ্কতা
বমি বমি ভাব ও খাবারে অরুচি
আপনার কিডনিতে যদি টক্সিন জমে থাকে তাহলে খাবারের অরুচি , মুখের স্বাদ কমে যাওয়া ও বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে । কিডনিতে টক্সিন দিতে যাওয়ার ফলে কিডনির কার্যকারিতা কমে যায় যার ফলে শরীরের বর্জ্য পদার্থ বা খারাপ পদার্থ গুলো শরীর থেকে বের হতে পারে না ।
যার ফলে আপনার মত বমি বমি ভাব আসে এবং ঠিকমতো খাবার খেতে পারেন না খাবারে অরুচি চলে আসে । এর ফলে ধীরে ধীরে কিডনি ড্যামেজ হইতে শুরু করে ।
শরীর ফুলে যাওয়া
আপনার শরীরে যখন ঠিকমতো পানি এবং লবণ নিঃসরণ করতে পারবে না তখন আপনার শরীরে পানি গুলো জমা হবে এবং আপনার শরীর ফুলতে শুরু করবে । শরীর থেকে পানি এবং লবণ নিঃসরণ করা কিডনির একটি কাজ। এ কাজটি যখন করতে পারে না তখন শরীরে পানি জমা হয় এর ফলে মানুষের শরীর ভুলে যেতে শুরু করে । শরীর ফুলে যাওয়া কিডনি ড্যামেজ এর একটি লক্ষণ।
ক্লান্ত অনুভব করা
আপনার কি দিয়ে ড্যামেজ হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হল আপনি ক্লান্ত অনুভব করবেন । আপনার শরীরে একটি হরমোন থাকে যার সাহায্যে রক্তে অক্সিজেনের পরিবহন হতে সাহায্য করে । এই হরমোন যখন কমে যায় তখন আপনার মধ্যে অক্সিজেন পরিবহনের মাত্রা কমে যায়।
তখন আপনার কাজ করতে সমস্যা হয় অল্পতেই ক্লান্তি অনুভব হয়। যেকোনো কাজ করতে গেলে একটুতেই ক্লান্তি অনুভব অনুভব হয় এটাও কিডনি ড্যামেজ হওয়ার একটি প্রধান লক্ষণ হতে পারে ।
প্রসাবে সমস্যা
কিডনি ড্যামেজের অন্যতম লক্ষণ হলো প্রসাবে রক্ত দেখা দেওয়া প্রসব ফেনা ফেনা হওয়া । আপনার শরীরে প্রোটিনের মাত্রা কমে গেলে তখন প্রসাদের রক্ত দেখা দিতে পারে অথবা ফেনা ফেনা হতে পারে। আপনার প্রসবের যদি রক্ত বা ফেনা দেখা দেয় তাহলে এটি মারাত্মক একটি লক্ষণ কিডনি ড্যামেজ হওয়ার । মানুষের শরীরে যখন ফিল্টার কাজ করে না তখন প্রসাবের মধ্যে এই পরিবর্তন দেখা যাবে ।
ঘুমের সমস্যা
কিডনি ড্যামেজ হতে শুরু করলে আপনার ঘুমের মধ্যে অনেক সমস্যা দেখা দিবে। কিডনিতে টক্সিন জমলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। আবার রাতে বারবার প্রসাব লাগলেও দেখা যায় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে । কিডনি ড্যামেজ হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হল ঠিকমতো ঘুম না হওয়া ।
শ্বাসকষ্ট
আপনার কিডনির ফিলটার যদি কাজ না করে ঠিকমতো তাহলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত তরল জমা হয়ে ফুসফুসে পানি জমতে সাহায্য করে। এর ফলে মানুষের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া আপনার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে তখন আপনার শ্বাস নিতে সমস্যা হবে এবং এর থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে । শ্বাসকষ্টের সমস্যা কিডনি ড্যামেজের আরেকটি লক্ষণ হতে পারে।
ত্বকে চুলকানি ও শুষ্কতা
কিডনির মিনারেল ঠিকমতো কাজ না করলে শরীরের ভিতর বজ্র পদার্থ জমা হতে শুরু করে। এর ফলে চুলকানি দেখা যায়। অনেক সময় আমরা এলার্জি ভেবে ভুল করে থাকি এটাও কিডনি ড্যামেজের একটি লক্ষণ ।
কিডনি রোগের কারণ গুলো
বিভিন্ন কারণে তিনি রোগ হতে পারে যে কারণগুলো প্রতিটি মানুষের জানা খুব প্রয়োজন। এই কারণগুলি মানুষ যদি জেনে থাকে তাহলে সতর্ক থাকতে পারবে এবং কিডনি সুস্থ থাকবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিডনি রোগের কারণ গুলো কি ঃ
- কিডনির সংক্রমণ
- ডায়াবেটিস
- দীর্ঘ সময় ওষুধ ব্যবহার
- প্রসাব আটকে রাখা
কিডনির সংক্রমণ
বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমণ হতে পারে। এ সংক্রমণের ফলে কিডনি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে যার ফলে কিডনি ড্যামেজ হতে শুরু করে।
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস হওয়ার ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় যার ফলে কিডনির ফিল্টারিং এর সমস্যা হয়। ঠিকমতো ফিল্টারিং না করার ফলে কিডনির ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে এবং এর ফলেই কিডনি ড্যামেজ হতে পারে ।
দীর্ঘ সময় ওষুধ ব্যবহার
অনেক মানুষ আছে যারা দীর্ঘ সময় ওসব খায় এই দীর্ঘ সময় ঔষধ ব্যবহারের ফলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ব্যথা নাশক ঔষধ গুলো কিডনির জন্য খুব খারাপ প্রভাব ফেলে। এই ঔষধ দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করে আসলে কিডনি ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে।
প্রসাব আটকে রাখা
অনেক সময় আছে আমরা অনেকেই প্রসাব আটকে রাখি । প্রসাব আটকে রাখার ফলে কিডনিতে বাধার সৃষ্টি করে চাপের সৃষ্টি করে যার ফলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কিডনিতে পাথর হতে পারে এ ধরনের আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আপনার উচিত হবে প্রসাব আটকে না রাখা। কিডনিকে সুস্থ রাখতে গেলে প্রসাব আটকে রাখা যাবে না।
কিডনি ড্যামেজ প্রতিরোধ
আমাদের প্রতিটা মানুষেরই স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া উচিত। আপনি যদি কিডনি ড্যামেজের প্রতিরোধ সম্পর্কে জেনে থাকেন তাহলে আপনি নিজে নিজেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা করে তুলতে পারবেন। তাই আপনার উচিত ড্যামেজ প্রতিরোধ সম্পর্কে জানা। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে কিডনি ড্যামেজ প্রতিরোধ করা যাবেঃ
- রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ
- পানি পান করা
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
- ধূমপান এড়িয়ে চলা
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ
আপনার শরীরের রক্তের শর্করা মাত্রার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে আপনাকে। যাদের ডাইবেটিস আছে তারা নিয়মিত ডাইবেটিস পরীক্ষা করাবেন এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন। আপনার শরীরের রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনি ফিল্টারিং ঠিকমতো কাজ করতে পারবেন না । এজন্যই কিডনি ড্যামেজ প্রতিরোধ করতে গেলে আপনার ডেসক্রিপ শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
পানি পান করা
পানির অপর নাম জীবন। আমাদের জীবনের পানি পান করার সাথে কোন তুলনা হয় না। আপনার শরীর সুস্থ রাখতে হলে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার ফলে শরীর থেকে অনেক বড় খারাপ প্রসারিত রোগ জীবাণু সব বের হয়ে যেতে সাহায্য করে। অধিক পানি পান করার ফলে কিডনির কার্যকর ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আপনার শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে হলে আপনি অধিক পরিমাণে পানি পান করবেন। পানি পান করার কোন বিকল্প ন...
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রতিটা মানুষের জন্য জরুরী । রক্তচাপ মন্ত্রী রাখার জন্য আপনি নিয়মিত রক্তচাপ মেপে দেখবেন। আপনার খাদ্যবাসের পরিবর্তন নিয়ে আসবেন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। কিডনি ড্যামেজ প্রতিরোধ করতে গেলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এর ফলে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন আপনার কিডনির উপরে চাপ ফেলতে পারে। আর এমনিতেও আপনার শরীর সুস্থ সবল রাখতে গেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরী। প্রতিটা মানুষের উচিত তার ওজনের দিকে লক্ষ্য রাখা। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন, হাঁটাহাঁটি করতে পারেন এবং খাবার খাওয়া নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে পারেন।
ধূমপান এড়িয়ে চলা
ধূমপান আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অধিক ধূমপান করার জন্য ক্যান্সারের মত কঠিন রোগ হতে পারে। ধূমপান এবং মধ্যপানের ফলে কি দিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। আপনারা আপনার কিডনি সুস্থ রাখতে আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে ধূমপান এড়িয়ে চলবেন।
অতিরিক্ত ধূমপান করার ফলে কি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে। তাই প্রতিটা মানুষের উচিত ধূমপান সম্পর্কে সচেতন হাওয়া।
যখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন
আপনি যদি আপনার মধ্যে কিডনি র্যামেজের লক্ষণ গুলো দেখতে পারেন তাহলে আর দেরি না করে খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ দিবেন ডাক্তারের কাছে যাবেন। কিডনি আমাদের শরীরের । খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ এটা নিয়ে আপনার অবহেলা করা উচিত না।
প্রসাব ও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সাধারণত কিডনি টেস্ট করা হয়। এ লক্ষণ গুলো আপনার মাঝে দেখলে ভয় না পেয়ে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে যাবেন এবং কি দিয়ে টেস্ট করিয়ে দেখবেন। আপনার কিডনি সুস্থ আছে কিনা।
আমার শেষ কথা
মানব শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মধ্য একটি অঙ্গ হলো কিডনি। প্রতিটা মানুষের উচিত তো আছে কিনা এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া। কিডনি ড্যামেজ হওয়া বা কিডনির সমস্যা হওয়া এটি একটি গুরুতর সমস্যা সময় মতো এর চিকিৎসা না নিলে পরে বড় কোন আকার ধারণ করতে পারে।
কিডনি ড্যামেজের এই লক্ষণ গুলো যদি আপনার মধ্যে দেখা যায় তাহলে আর এ থেকে অবহেলা করবেন না। যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে যাবেন এবং কিডনি টেস্ট করিয়ে দেখবেন ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url