বিট কি কাঁচা খাওয়া যায়

বিটরুট পাউডারের দাম কতবিট কি  কাঁচা খাওয়া নিরাপদ ? কাঁচা বিট খেলে কি উপকার হবে এবং কি অপকার হবে আজ আপনি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবেন । বিট আমাদের রান্না ঘরের একটি পরিচিত শাকসবজি একটি বিভিন্ন রঙের হয় যেমন, লাল গোলাপি ও হালকা হলুদ।

সূচিপত্র জানতে পারলে আপনি আপনার স্বাস্থ্যসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন । চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক বিট কাঁচা খাওয়া যায় কিনা।

বিট কি কাঁচা খাওয়া যায় 

 হ্যাঁ বিট কাঁচা খাওয়া যায় এবং এটি বেশ স্বাস্থ্যকর। বিট এমন একটি সত্যি যা কাটা অবস্থায় পুষ্টিকর ও নিরাপদ । বিট আপনারা কম বেশি সবাই চেনেন । বিট বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে যেমন, লাল , গোলাপি ও হালকা হলুদ হয়ে থাকে । অনেকেই বিট রান্না করে খেয়ে থাকেন তবে সম্প্রতি কাঁচা বিট খাওয়ার জনপ্রিয়তা বেড়েছে । 

আরো পড়ুন : কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

রান্না না করেই আপনি বিট খেতে পারেন সালাত ও জুস হিসেবে । বিট কাঁচা খেলে আপনি পুষ্টিগুণ একটু বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । কারণ রান্না করার পরে দিতে থাকা কিছু পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যেতে পারে বিশেষ করে ভিটামিন সি । অনেক পুষ্টিবিদরা মনে করেন কাঁচা ডিম খেলে এর পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণরূপে বজায় থাকে ।  তাই কাঁচা বিট  খেলে আপনি পুষ্টিগুণ ভালোভাবে পেতে পারেন । 

কাঁচা বিটের পুষ্টিগুণ

সম্প্রতি কাঁচা বিট খাওয়ার জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে । আপনি নিশ্চয়ই কাঁচা বিট খান তাহলে অবশ্যই আপনাকে কাঁচা বিটের মধ্যে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে এটা জানা উচিত । এখন আপনাদের জানাবো কাঁচা বিটের মধ্যে কি কি পুষ্টি গুণ বিদ্যমান রয়েছে ।

• আয়রন
• ফাইবার
• পটাশিয়াম
• ফোলেন

আয়রন

কাঁচা বিটে আইরন রয়েছে যা আপনার শরীরের জন্য খুব উপকারী । আপনার শরীরে আইরনের ঘাটতি পূরণ করতে হলে আপনাকে কাঁচা বিট খেতে হবে । আইরনের অভাবে আপনার অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে ।

এর ফলে আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে ঠেকা সে হয়ে যেতে পারে , শ্বাসকষ্ট হতে পারে , মাথা ঘোরা দেখা দিতে পারে , হাত পা ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে , নখ ভেঙ্গে যেতে পারে বা পাতলা হয়ে যেতে পারে এমন আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে আপনার । তাই আইরনের ঘাটতি পূরণ করতে আপনি কাঁচা বিট খাবেন । 

ফাইবার

কাঁচা  বিটে  রয়েছে ফাইবার নামক একটি উপাদান যা আপনার শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে । ফাইবারের ঘাটতি পূরণ করতে আপনাকে কাঁচা  বিট খেতে হবে । ফাইবারের অভাব দেখা দিলে আপনার শরীরে অনেক বড় বড় রোগ বাসা বাঁধতে পারে ।

 যেমন অন্তরে ক্যান্সার হতে পারে , ওজন বেড়ে যেতে পারে , ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাহিরে যেতে পারে এমন আরো অনেক সমস্যা হতে পারে । এসব সমস্যা থেকে বাঁচতে আপনাকে ফাইবারের অভাব পূরণ করতে হবে আর কাঁচা  বিটে  রয়েছে ফাইবার যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে ।

পটাশিয়াম

পটাশিয়াম এমন একটি পুষ্টিগুণ যার অভাবে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন আপনার শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যাবে , বমি বমি ভাব হবে শরীরে , অতিরিক্ত প্রসব হবে , কোষ্ঠকাঠিন্য হবে , হাত পায়ের কব্জি অবশ ভাব আসবে ও শ্বাসকষ্টের মতো রোগও দেখা দিতে পারে ।

আপনার এই পটাশিয়ামের অভাবে । আর কাঁচা  বিটে  রয়েছে পটাশিয়াম যা আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আপনি যদি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে চান ভালো রাখতে চান তাহলে পটাশিয়ামযুক্ত খাবার গুলো খাবেন । 

ফোলেন

কাঁচা পিঠে রয়েছে ফোলেন নামক অ্যাসিড যেটা আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী । অভাবে আপনার শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন জিহ্বায় ঘা , মানসিক সমস্যা , শ্বাসকষ্ট , শরীর দুর্বল , ত্বক ফ্যাকাসি হয়ে যাওয়া , হজম জনিত সমস্যা এমন আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে । এসব সমস্যা থেকে বাঁচতে আপনি আপনার শরীরে খোলেনের অভাব পূরণ করবেন । যে সব খাবারের মধ্যেও রয়েছে সেই খাবারগুলো বেশি খাবেন ।

কাঁচা বিট খাওয়ার উপকারিতা 

বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের মধ্যে কাঁচা দুধ খাওয়ার জনপ্রিয়তা ব্যাপক হারে বেড়েছে । কাঁচা বিট খেলে আপনার স্বাস্থ্য জন্য খুব উপকারী এটি আপনার রক্তস্বল্পতা দূর করবে হজমে সাহায্য করবে এমন আরো অনেক উপকারে আসবে । চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কাঁচা বিট কি কি উপকার করে থাকে 

• নিয়মিত কাঁচা বিট খেলে আপনার হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে
• কাঁচা বিট আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে
• কাঁচা বিট খাওয়ার ফলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে
• আপনি যদি নিয়মিত কাঁচা বিট খান তাহলে আপনার শরীরের শক্তি ও কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে

উপরে আপনাদের কাঁচা বিট এর উপকারিতা সম্পর্কে জানালাম । কারণ প্রতিটা মানুষেরই জানা উচিত কোন জিনিস আমাদের উপকারে এবং কোন জিনিস আমাদের অপকারে আসে । আপনি যখন কাঁচা বিট খাবেন তখন আপনার নিশ্চয়ই এটার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে । এর জন্যই আপনাদের কাঁচা বিট এর উপকারিতা সম্পর্কে জানিয়ে দিলাম । 

যারা কাঁচা বিট খাবেন না

সব জিনিসেরই যেমন ভালো দিক রয়েছে তেমনি খারাপ দিকে রয়েছে । সবাই সবকিছু খেতে পারেন না কিছু বিশেষ পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে হয় । তেমনি কাঁচা বিট রয়েছে যা সবাই খেতে পারবেন না খেলে ক্ষতি হতে পারে । যাদের মধ্য এ সমস্যাগুলো আছে তারা কাঁচা বিট থেকে দূরে থাকবেন । চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কারা কাঁচা বিট খেতে পারবেন না ।

কিডনিতে পাথর ঃ আপনার যদি কিডনিতে পাথর থেকে থাকে তাহলে আপনি কাঁচা বিট খাবেন না। বিটের মধ্যে রয়েছে অক্সালেট যা কিডনি পাথরের ঝুঁকি বাড়াতে সাহায্য করে ।

নিম্ন রক্তচাপ ঃ আপনার যদি নিম্ন রক্তচাপ থেকে থাকে তাহলে আপনি বিট  এড়িয়ে চলবেন। কারণ বিট রক্তচাপ আরো কমিয়ে দিতে পারে ।

এলার্জির সমস্যা ঃ আপনার শরীরে যদি এলার্জি সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি বিট এড়িয়ে চলবেন খাবেন না । কারণ বিট খাওয়ার ফলে এলার্জি এবং ফুসকুড়ি সমস্যা থাকলে সেটা আরো বাড়তে পারে।

যেভাবে খাবেন কাঁচা বিট

অনেক মানুষই আছেন যারা জানেন না কাঁচা বিট আসলে কিভাবে খেতে হবে । দেখে হয়তো ভাবেন এটা কিভাবে খায় খেলে কি হয় । তাই আপনাদের জন্য নিচে দেওয়া হল কাঁচা বিট আপনি কিভাবে খাবেন । 

• পাতলা করে কেটে টমেটো গাজর শসার সাথে মিশিয়ে সালাদ হিসেবে খেতে পারেন 
• বিট গাজর ও আদা একসাথে ব্লেন্ড করে জুস বানিয়েও খেতে পারবেন
• দুধ বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে স্মোদি তৈরি করে খেতে পারবেন

কিছু প্রশ্ন

Q : বিট দিনে কতটুকু খাওয়া নিরাপদ ?

A : প্রতিদিন হাত কাপ প্রায় ৭৫ থেকে ১০০ গ্রাম খাওয়ার নিরাপদ

Q : গর্ভবতী নারীরা কি কাঁচা দুধ খেতে পারে ?

A : হ্যাঁ , তবে পরিমাণ বজায় রেখে খাওয়া উচিত ,

আমার শেষ কথা

বিট কাঁচা খাওয়া যায় এবং তার শরীরের জন্য অনেক উপকারী । সবার শরীরের জন্য উপকারী না আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়াই ভালো । রান্না করা বিটেড় চেয়ে কাঁচা বিটে পুষ্টি বেশি থাকে বলে মনে করেন । 

আর যাদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে , এলার্জি সমস্যা রয়েছে , নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে তারা বিট না খাওয়াই ভালো । যাদের মধ্যে এই সমস্যাগুলো রয়েছে তারা বাদে বাকিরা খেতে পারবে । আপনি যদি বিট খাওয়ার নতুন উপায় খোঁজেন তাহলে আজই একটি রেসিপি ট্রাই করে দেখুন ।